পশ্চিম তীরে ইসরাইলি হামলায় নারীসহ আট ফিলিস্তিনি নিহত
- By Jamini Roy --
- 25 December, 2024
অধিকৃত পশ্চিম তীরের তুলকারেম ও নুর শামস শরণার্থী শিবিরে ড্রোন ও সামরিক হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ ঘটনায় নারীসহ অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর এই বর্বরোচিত হামলার শিকার হয়েছেন নিরীহ ফিলিস্তিনিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ইসরাইলি ড্রোনের মাধ্যমে হামলা চালানো হয়। তুলকারেম শরণার্থী শিবিরে সাতজন এবং পার্শ্ববর্তী নুর শামস শরণার্থী শিবিরে একজন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে দুই নারী ও এক তরুণী রয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে খাওলা আলী আবদুল্লাহ আবদো (৫৩) এবং বারা খালিদ হুসেইন (৩০) নামে দুই নারী এবং ফাতি সাঈদ সালেম ওবায়েদ নামে ১৮ বছর বয়সি এক তরুণী রয়েছেন। ওয়াফা সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ড্রোন হামলায় দুই নারী নিহত হয়েছেন এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে তরুণীর মৃত্যু হয়েছে।
নুর শামস শরণার্থী শিবিরে ড্রোন হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানায়, তুলকারেমে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযানে অংশ নিয়ে একজন ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু অস্ত্র জব্দের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তুলকারেমে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় তাদের দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। এদিকে ওয়াফা জানিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে এবং বুধবার ভোরে অধিকৃত পশ্চিম তীরজুড়ে ইসরাইলি সামরিক অভিযান আরও তীব্র হয়। ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটেছে।
ইসরাইলি বাহিনীর হামলার মাত্রা ২০২৩ সাল থেকে নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিসংঘের ত্রাণ ও মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনী এবং বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় ৯৬৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ২১০ জন শিশু।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস দক্ষিণ ইসরাইলে অতর্কিত হামলা চালানোর পর থেকে গাজা এবং পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর অভিযান এবং হামলার মাত্রা ব্যাপক বেড়েছে। গাজায় চলমান যুদ্ধের পাশাপাশি পশ্চিম তীরে প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে নির্যাতনের মুখে পড়তে হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই সংঘর্ষ অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাত্রা বাড়তে থাকবে।